*প্রথমেই বলে নেয়া দরকার এই গল্পের সমস্ত চরিত্রই বাস্তব। এও বলা প্রয়োজন যে এরা সবাইই এখন জীবনে বেশ প্রতিষ্ঠিত। কেউ কেউ বেশ লোভনীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্রি-কার্ড খেলতাম বলে যে সবাই-ই খেলত, তা নয়। এটা ছিল আমাদের সময় কাটানোর একটা বেশ সুন্দর হাতিয়ার। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগের পর এগুলোও ত্যাগ করেছি। এই পোস্ট পড়ে কেউ থ্রি-কার্ড খেলায় উৎসাহিত হবেন না, এটা যেমন আমার বিশ্বাস, তেমনি এই পোস্টের বিপরীতার্থ কেউ করবেন না, এও আমার আশা।
=========================================
সালাউদ্দিনের ঠোটেই সিগারেটটা শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখে রাকিব বারবার সিগারেটটার দিকে তাকাচ্ছে। তার জিভের আগায় জল এসে যাচ্ছে, অন্যকে টক খেতে দেখলে শিশুদের জিভে যেমন জল আসে তেমনি। বারোজনের বোর্ডে পরপর তিন বোর্ডে ব্লাইন্ড খেলে খেলে রাকিব তার 'ব্লাইন্ড' নামটার সার্থকতা প্রমান করছে। ওদিকে তার মানিব্যাগটাও প্রায় শূন্য হয়ে আসছে। তিনবারের দু’বারই সালাউদ্দিনের কাছে বিট খেয়েছে রাকিব, এখন আবার বোর্ড থেকে তোলা টাকায় কেনা সিগারেটটার পাছাটায় একটা টান দিবে তাও পারছে না, সালুর ঠোট পর্যন্ত আসতেই কীনা সিগারেটটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। টাকা হেরে এই শীতেও কান গরম হয়ে যাচ্ছে রাকিবের। এদিকে মালাকর ইয়ার্কি মারতেছে, ‘ব্লাইন্ড, তোর ধুয়ে আসা দরকার।‘
‘সালু ভাই, দেনতো পাছাটা একটু মারি।‘
সালাউদ্দিন আগুনটা এগিয়ে দেয় রাকিবের দিকে। রতনও তাকিয়ে ছিল সিগারেটটার দিকে, রাকিবের হাতে চলে যাওয়ায় রতনের দৃষ্টিটা সালাউদ্দীন থেকে রাকিবের দিকে ফেরে। রাকিব সিগারেটটা হাতে নিয়ে বৃদ্ধা এবং তর্জনীর মাঝে ফেলে ঠোটের সাথে মিশিয়ে কষে টান দেয়। ‘উ: শালা ঠোটটা পুড়ে গেল।‘ বলে স্টাবটা ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে।
দুই কার্ডে শো হয়ে যাওয়ায় এবার জোকারের খেলা। মিলন তার লাল চোখের তীক্ষ্ন দৃষ্টি দিয়ে মৃদু-মৃদু ফাক করে তাশ তিনটিকে দেখে নিয়েই ২ টাকা হিটায়। আউয়াল মাত্র একটা তাশ দেখেই ২ টাকা হিট দেয়। আউয়ালের টাকা হিটানোর ভাব দেখেই সবাই বুঝে ফেলে সে একটা জোকার পেয়েছে। শ্যামল, হিল্টন আর ভাই শাহীন ব্লাইণ্ডেই চালিয়ে যায় আরো এক রাউন্ড। আজাহার, ডিপলু সিনে বসে যায়। লিটন সাইডশোতে আউয়ালকে বসিয়ে দেয়, আউয়ালের জোকার দিয়ে একটা কালার হয়েছে। খেলা এভাবে এগিয়ে চলে।
বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটা থেকে শুরু, এখন শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা। খাওয়া-নাস্তা-গোসল চলছে এরি মধ্যে। দু’জন তিনজন করে উঠে গিয়ে খেয়ে আসছে আর অন্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খাবার নিয়ে আসা হচ্ছে। সিগারেট চলছে বোর্ডের টাকা তুলে। ব্যালকনি থেকে ডেকে মোজাম অথবা শাহআলমের দোকান থেকে সিগারেট আনানো হচ্ছে আর তা তোলার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে সুতায় বাধা ঝুড়ি অথবা সিগারেটের প্যাকেট। তাশ ডিলিংয়ের ফাকে কেউ বেলালকে ডেকে বলছে সিগারেট দিয়ে যেতে। শীতের বাতাস আটকবার জন্য উত্তরের জানালাগুলো বন্ধ থাকলেও মাঝে মাঝে খুলে দেয়া হচ্ছে সিগারেটের ধোয়াকে সরিয়ে দেয়ার জন্য। এগিয়ে চলছে খেলা, এগিয়ে চলছে সময়।
জোকার শেষ। নরমাল খেলায় দুটো আট আর একটা আটের মত মাথা বাকা দেখেই সালাউদ্দিন হিটায় দুই টাকা। রতন আগেই সিনে বসে গিয়েছে। সালাউদ্দিনকে বলে, ‘পুরোটা দেখে নাও।‘
‘১/২ প্রোবাবিলিটি ধরে দুই টাকা হিটানোই যায়।‘ সালাউদ্দিনের আত্মবিশ্বাসী উত্তর। মাথা বাকা তাশটা আট হলে আটের ট্রয়, নইলে আটের জোড়া। নরামালে আটের জোড়াইবা কম কীসে! একটু আগে ৭ টপেও অনেক বড় বোর্ড নিয়েছে ভাই শাহীন।
মালাকর তাশ তিনটা তুলে দেখে নিয়ে অন্য তাশগুলোর সাথে মিশিয়ে দেয় আর বিড়বিড় করে বলে, ‘ধুর! সম্রাট না থাকলে থ্রি-কার্ড জমে নাকি! এ-কে ৪৭ দাদাও নেই।’ সম্রাট মানে সত্যিকারের সম্রাট-ইলতুৎ মিশ। এই থ্রিকার্ড জগতের অবিসংবাদিত সম্রাট!
টানা ছাব্বিশ ঘন্টার খেলায় সবাই-ই ছিল ক্লান্ত। মালাকরের কথায় সবাইই যেন হুশ ফিরে পায়। সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়-এবার একটি জোকার করা হবে এবং এই জোকার শেষ মানে আজকের মত খেলা শেষ।
খেলা শেষ। রাকিবের ১৭০ টাকা হার। এটাই সর্বোচ্চ। আর সালাউদ্দীনের ১৫০ টাকাই সর্বোচ্চ জেতা। ছাব্বিশ ঘন্টা খেলার এই হল ফলাফল।
এবার খাওয়া-দাওয়ার পালা। মোজামের দোকানে গিয়ে চা-বিস্কুট-রুটি-ডিম। যে যে জিতেছে সে সে মূল্য পরিশোধ করবে। এই-ই নিয়ম।
তারপর ক্যাম্পাস। চাদের আলোয় সামান্য শিশিরভেজা ঘাসের উপর বসে বসে হিসেব করা কোন বোর্ডে রাকিবের বসে যাওয়া উচিত হয়নি, কোন বোর্ডে মালাকর একটা জোকার পেলে রতনের সাহেবের ট্রয়টা মেরে দেয়া যেত। যেবার বিবি জোকার ছিল সেবার বিবি না হয়ে দুই জোকার হলে ১০০ টাকার বোর্ডটা লিটনই পেত। ই-ত্যা-দি।
How to choose the best slot machine casino in 2021
উত্তরমুছুনThe Best Casino Sites 해외사이트 ⏩ Top 20+ Slot Sites 인생도박 ✓ 골인 뱃 Best Bonus Offers ✓ New Brands ✓ Popular Brands ✓ Play yesbet88 Now! 유니벳