বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই, ২০১০

রূপকথার দেশে কবি ও কৃষক

রূপকথার এক দেশে একবার দুর্ভিক্ষ হলো
আধপেটা খাওয়া কৃষকগণ না খেয়ে মরলো, তবুও
জমিদারগণ খাজনা আদায় থেকে বিরত হলেন না
রাজকোষেও যথারীতি খাজনা জমা হলো এবং
রাজকবিগণও যথারীতি কবিতা লিখলেন
তাদের কবিতা শুনে রাজা শান্তিতে ঘুমাতে গেলেন

কবিরা স্বভাবতই আবেগী, তাই
কেউ কেউ কৃষকগণের দূরাবস্থা নিয়েও কবিতা লিখলেন, যদিও
সেসব কবিতা রাজাকে শুনানো হলো না
(এই দুর্ভিক্ষে নির্বিঘ্নে পেট পুরে ভাত খাওয়ার সুযোগ কে হাতছাড়া করতে চায় ?)

রূপকথার সেই দেশে কিছু গেয়ো কবি ছিল
রাজার দরবারে সম্মান না পেলেও কৃষকগণ তাদের খুব ভালবাসত
কৃষকদের প্রতি তাঁদেরও ছিল অনেক মমত্ববোধ
বিনোদনহীন কৃষকদের আনন্দ দেয়ার মধ্যেই ছিল তাঁদের সুখ

কালের বিবর্তনে রাজকবিগণের উত্তরসুরিরা আধুনিক হলেন
তাঁদের আধুনিকতার দাপটে গেয়ো কবিগণ হারিয়ে গেলেন
কৃষকগণ কবিতা থেকে বঞ্চিত হলো, এবং
কবিতা তার আভিজাত্য ফিরে পেলো
(গেয়ো কৃষকরা কবিতার কী বোঝে ?)

রূপকথার সেই দেশে একবার যুদ্ধ শুরু হলো
কবিগণ শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে বলে (মনে মনে) বিরক্ত হলেন
নির্বিঘ্নে কবিতা রচনা করার জন্য তাঁরা সীমান্ত পাড়ি দিলেন এবং
সীমান্তের ওপারে বসে তাঁরা দেশের জন্য কবিতা লিখলেন

কৃষকগণ কবিতা লিখতে জানে না, সুতরাং
যারা ওপারে গেল তারা কবিদের মত আদৃত হল না
রিফিউজি ক্যাম্পে কেউ মারা গেল, কেউ অর্ধমৃত হয়ে বেঁচে রইলো
বেশিরভাগ কৃষকই বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে নড়ল না
তারা লাঙল ছেড়ে জোয়াল কাধে শত্রু হননে নেমে গেল
যুদ্ধে যোগ দেয়ার অপরাধে অনেকেরই মা-বোন-বউ ধর্ষিত হল
বাবা-ভাই-সন্তান বেয়নেটের ধারাল খোচা আর গুলি খেয়ে মারা গেল
দেশে কৃষকদের এইসব বীরত্মগাথা শুনে কবিরা কবিতা লিখলেন

যুদ্ধ শেষে কবিরা সবাই দেশে ফিরলেন
বিজয়ের আনন্দে তারা হাজার হাজার কবিতা লিখলেন
কৃষকদের অনেকেই যুদ্ধ শেষেও ফিরল না
কবিরা তাদের নিয়েও কবিতা লিখলেন

রূপকথার সে দেশে কবিরা আজও কবিতা লেখেন
জোছনার ঠ্যাং, গোধুলির টিকোলো নাক কবিদের ভাষায় বিমূর্ত মূর্তি লাভ করে
কবিদের সেসব কবিতায় কৃষকের লাঙলের ফলার কথাও থাকে
কাস্তের মত প্রিয়ার বাঁকা গ্রীবা অথবা মন
ধান কাটা শেষে শস্যহীন মাঠের মত ফাঁকা হৃদয়
কবিদের উপমায় ধন্য হয় কৃষকের যাবতীয় উপকরণ, তবে
কৃষকগণ সেসব কবিতা যদিবা কোনদিন মরিচের ঠোঙায় পেয়েও থাকে
তা বোঝার সাধ্যি তাদের থাকে না, কেননা
কবিরা নিজেরাই যে সেসব .......(ডট.ডট.ডট)

--------------------
পরবর্তী দৃশ্য: প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে সন্ন্যাসীর ভো দৌঁড় অতপর নাঙা সন্ন্যাসীতে রূপান্তর

মঙ্গলবার, ২০ জুলাই, ২০১০

মানবতাই হোক মানুষের একমাত্র ধর্ম

তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশেই জন্ম মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে। জন্ম দেয়াই যেন জীবনের উদ্দেশ্য কিংবা কোন প্রকার পদ্ধতিহীন যৌনতা আমাদের পৃথিবীটাকে দিন দিন মানুষে মানুষে ভরে তুলছে। এসব দেখে দেখে শাওনের মন খারাপ হয়ে যায়। তারই এক ক্লাশমেটের (হুজুর) বড় ভাই- যে কীনা একজন বি.সি.এস অফিসার (ডাক্তার)- তার ষষ্ঠ সন্তান জন্ম নিয়েছে ক'দিন আগে। তার ঘৃণা লাগে এসব মানুষকে।

এই প্রযুক্তির যুগেও আমাদের দেশের লোকদের এক একজনের পাচটা, সাতটা, দশটা সন্তান হচ্ছে। এখনো হুজুরদের ফতোয়া শোনা যায় গ্রামে-গঞ্জে-এমনিক শহরেও। তারা মাহফিলে মাইক বাজিয়ে এসব ফতোয়া প্রচার করে। এক একজনের গলা টিপে উচ্চারিত শব্দগুলোকে থামিয়ে দিতে ইচ্ছে হয় শাওনের। যতসব ভণ্ড সুবিধাবাদী ধর্মব্যবসায়ীর দল!

পৃথিবীর কারো সাধ্য নেই এদের গলাবাজি, এদের ঠকবাজি বন্ধ করার। কারণ এদের খুটির জোর খুব শক্ত। আল্লাহ, ভগবান, গড নামক এক মিথ্যে বস্তুর ভয় দেখিয়ে তারা দুনিয়ার তাবত মানুষকে অথর্ব ও ভীতু করে রেখেছে। শাওনের ইচ্ছে হয়, এইসব মানুষকে সত্যের পথে নিয়ে আসতে। তার গলা ফাটিয়ে বলতে ইচ্ছে হয়- "তোমরা যা জান, সব ভুল। তোমরা সত্যকে আড়াল করে তোমাদের শিখিয়ে দেয়া এক মিথ্যাকে আকড়ে আছ। তোমাদের জন্মের জন্য কোন আল্লহ বা ঈশ্বরের করুণা নেই, করুণা যদি থেকেই থাকে সে তোমার বাবা-মায়ের এবং এই মাটির, এই প্রকৃতির। তোমাদের সৎ ও অসৎ পথে পরিচালনা করার জন্য কোন ফেরেশতা বা শয়তান নেই, রয়েছে তোমার বিবেক কিংবা নৈতিকতাহীন মানসিকতা। তোমাদের পাপ-পূণ্য বোঝার দরকার নেই, তোমাদের দরকার ভাল-মন্দ শিক্ষা। তোমাদের স্বর্গ দরকার নেই, তোমাদের দরকার সুখ ও শান্তি। মৃত্যুর পরে তোমাদের শাস্তি দেবার জন্য কোন দোজখ নেই, সেখানে শাস্তি দেয়ার মতোও কেউ নেই। তোমরা তোমাদের বিবেক দ্বারা পরিচালিত হও এবং দেশের আইন-কানুন মেনে চলো, তাহলে পৃথিবীকেই তোমরা স্বর্গে পরিণত করতে পার। তোমরা তোমাদের সন্তানদের যেমন ভালবাস, পৃথিবীর প্রতিটা মানুষকেই তেমন ভালবাসতে শেখো। দেখবে পৃথিবীতে কোন লাদেন কিংবা জাওয়াহিরি জন্মাবে না, বুশ কিংবা ব্লেয়ার জন্মাবে না। জন্মাবে রবীন্দ্রনাথ, কীটস্ কিংবা আইনস্টাইন। তোমরা যে পথে চলছো তাতে পৃথিবী অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে, অনাগতদের জন্য এক ভয়াবহ পৃথিবী তৈরী করে যাচ্ছ তোমরা। তোমরা কি একবারও ভেবেছো- তোমাদের সন্তানদের মৃত্যুর পথ উন্মুক্ত করে দিয়ে যাচ্ছ তোমরা। তাদেরকে বাচতে দাও। তুমি কান পাতলেই শুনতে পাবে ওদের চীৎকার। ওরা বাচতে চায়। তোমাদের পরস্পরের ভালবাসা এবং পৃথিবীর প্রতি তোমাদের ভালবাসাই ওদেরকে বাচাতে পারে। সুতরাং তোমরা ভালবাস-- নিজেকে, অপরকে এবং পৃথিবীকে।"

শাওন জানে তার এ কথা কেউ শুনবে না। এ কথা সে যেখানেই বলতে যাবে, সেখানেই সে অবাঞ্চিত হয়ে যাবে। ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তাকে মুরতাদ ঘোষণা করা হবে এবং তাকে কতল করার পরোয়ানা জারী করবে এইসব ধর্মব্যবসায়ীরা।

কিন্ত ভবগান বা আল্লাহর মৃত্যু না হলে পৃথিবীতে প্রকৃত ভালবাসা সৃষ্টির কোন পথ নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহকে বিশ্বাস করে, সে ভগবাণে বিশ্বাস করে না এবং যে ভগবাণে বিশ্বাস করে, সে আল্লাহকে বিশ্বাস করে না। শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকলেও চলত। একজন ভগবাণ-বিশ্বাসী মানুষ অন্য সমস্ত আল্লাহ-বিশ্বাসী মানুষকে ঘৃণা করে এবং আল্লাহ-বিশ্বাসী মানুষ সমস্ত ভগবাণ-বিশ্বাসী মানুষকে ঘৃণা করে। (ইসলাম অনুসারীদের বিধর্মী শব্দটার ব্যবহারটা ভেবে দেখুন)। এই যে মানুষের প্রতি মানুষের পারস্পরিক ঘৃণা এবং এর সাথে যুক্ত হয়েছে নব্য জেহাদী চেতনা- যা পৃথিবী জুড়ে এক ইসলামী জঙ্গীবাদের সূচনা করেছে- এসব পৃথিবীকে ধ্বংসের এক পায়তারা। কে শিখাবে এসব জেহাদীদের, এসব জঙ্গীদের যে- তোমরা যার জন্য নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে অপর অনেক জীবনকে মৃত্যুর কোলে পৌছে দিচ্ছ, সে শুধুই মিথ্যে, এক অলীক কল্পনা।

শাওনের বলতে ইচ্ছে হয়- এই দেখ, আমি একজন মানুষ, তোমাদের মত মিথ্যে ঈশ্বর বা আল্লাহতে আমি বিশ্বাস করি না কিন্তু সকলের প্রতি আমার রয়েছে অগাধ ভালবাসা।

তোমাদের ঈশ্বর কিংবা আল্লাহর উপস্থিতি কেবল বিশ্বাসে, বাস্তবে নয়। তোমরা ঈশ্বর, আল্লাহ এবং বেহেশতকে যেমন ভালবাস, তেমনি করে তোমরা মানুষকে ভালবাসতে পার না? মানুষ মেরে বেহেশতে যাওয়ার যে স্বপ্নে তোমরা বিভোর, সে বেহেশতের ঠিকানা কি তোমাদের জানা আছে? সে তোমাদের অন্তরে। তোমাদের অন্তরের ভালবাসাই তোমাকে সেখানে পৌছে দিতে পারে এবং সেজন্য তোমার মৃত্যুর দরকার নেই, কাউকে মারার তো প্রশ্নই আসে না।

এ পৃথিবীর সবাইকে শাওনের একটি কবিতার দু'টি লাইন শোনাতে ইচ্ছে করে, যে কবিতাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার এক সহপাঠি লিখেছিল--
"তুমি সন্ত্রাসী মার, তুমি ডাকাত মার
কিন্তু ভেবে দেখো
তুমি একজন মানুষ মারছো।

ক্যাম্পাসে সোনালী সময় : থ্রীকার্ড

*প্রথমেই বলে নেয়া দরকার এই গল্পের সমস্ত চরিত্রই বাস্তব। এও বলা প্রয়োজন যে এরা সবাইই এখন জীবনে বেশ প্রতিষ্ঠিত। কেউ কেউ বেশ লোভনীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্রি-কার্ড খেলতাম বলে যে সবাই-ই খেলত, তা নয়। এটা ছিল আমাদের সময় কাটানোর একটা বেশ সুন্দর হাতিয়ার। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগের পর এগুলোও ত্যাগ করেছি। এই পোস্ট পড়ে কেউ থ্রি-কার্ড খেলায় উৎসাহিত হবেন না, এটা যেমন আমার বিশ্বাস, তেমনি এই পোস্টের বিপরীতার্থ কেউ করবেন না, এও আমার আশা
=========================================

সালাউদ্দিনের ঠোটেই সিগারেটটা শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখে রাকিব বারবার সিগারেটটার দিকে তাকাচ্ছে। তার জিভের আগায় জল এসে যাচ্ছে, অন্যকে টক খেতে দেখলে শিশুদের জিভে যেমন জল আসে তেমনি। বারোজনের বোর্ডে পরপর তিন বোর্ডে ব্লাইন্ড খেলে খেলে রাকিব তার 'ব্লাইন্ড' নামটার সার্থকতা প্রমান করছে। ওদিকে তার মানিব্যাগটাও প্রায় শূন্য হয়ে আসছে। তিনবারের দু’বারই সালাউদ্দিনের কাছে বিট খেয়েছে রাকিব, এখন আবার বোর্ড থেকে তোলা টাকায় কেনা সিগারেটটার পাছাটায় একটা টান দিবে তাও পারছে না, সালুর ঠোট পর্যন্ত আসতেই কীনা সিগারেটটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। টাকা হেরে এই শীতেও কান গরম হয়ে যাচ্ছে রাকিবের। এদিকে মালাকর ইয়ার্কি মারতেছে, ‘ব্লাইন্ড, তোর ধুয়ে আসা দরকার।‘

‘সালু ভাই, দেনতো পাছাটা একটু মারি।‘
সালাউদ্দিন আগুনটা এগিয়ে দেয় রাকিবের দিকে। রতনও তাকিয়ে ছিল সিগারেটটার দিকে, রাকিবের হাতে চলে যাওয়ায় রতনের দৃষ্টিটা সালাউদ্দীন থেকে রাকিবের দিকে ফেরে। রাকিব সিগারেটটা হাতে নিয়ে বৃদ্ধা এবং তর্জনীর মাঝে ফেলে ঠোটের সাথে মিশিয়ে কষে টান দেয়। ‘উ: শালা ঠোটটা পুড়ে গেল।‘ বলে স্টাবটা ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে।

দুই কার্ডে শো হয়ে যাওয়ায় এবার জোকারের খেলা। মিলন তার লাল চোখের তীক্ষ্ন দৃষ্টি দিয়ে মৃদু-মৃদু ফাক করে তাশ তিনটিকে দেখে নিয়েই ২ টাকা হিটায়। আউয়াল মাত্র একটা তাশ দেখেই ২ টাকা হিট দেয়। আউয়ালের টাকা হিটানোর ভাব দেখেই সবাই বুঝে ফেলে সে একটা জোকার পেয়েছে। শ্যামল, হিল্টন আর ভাই শাহীন ব্লাইণ্ডেই চালিয়ে যায় আরো এক রাউন্ড। আজাহার, ডিপলু সিনে বসে যায়। লিটন সাইডশোতে আউয়ালকে বসিয়ে দেয়, আউয়ালের জোকার দিয়ে একটা কালার হয়েছে। খেলা এভাবে এগিয়ে চলে।

বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটা থেকে শুরু, এখন শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা। খাওয়া-নাস্তা-গোসল চলছে এরি মধ্যে। দু’জন তিনজন করে উঠে গিয়ে খেয়ে আসছে আর অন্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খাবার নিয়ে আসা হচ্ছে। সিগারেট চলছে বোর্ডের টাকা তুলে। ব্যালকনি থেকে ডেকে মোজাম অথবা শাহআলমের দোকান থেকে সিগারেট আনানো হচ্ছে আর তা তোলার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে সুতায় বাধা ঝুড়ি অথবা সিগারেটের প্যাকেট। তাশ ডিলিংয়ের ফাকে কেউ বেলালকে ডেকে বলছে সিগারেট দিয়ে যেতে। শীতের বাতাস আটকবার জন্য উত্তরের জানালাগুলো বন্ধ থাকলেও মাঝে মাঝে খুলে দেয়া হচ্ছে সিগারেটের ধোয়াকে সরিয়ে দেয়ার জন্য। এগিয়ে চলছে খেলা, এগিয়ে চলছে সময়।

জোকার শেষ। নরমাল খেলায় দুটো আট আর একটা আটের মত মাথা বাকা দেখেই সালাউদ্দিন হিটায় দুই টাকা। রতন আগেই সিনে বসে গিয়েছে। সালাউদ্দিনকে বলে, ‘পুরোটা দেখে নাও।‘

‘১/২ প্রোবাবিলিটি ধরে দুই টাকা হিটানোই যায়।‘ সালাউদ্দিনের আত্মবিশ্বাসী উত্তর। মাথা বাকা তাশটা আট হলে আটের ট্রয়, নইলে আটের জোড়া। নরামালে আটের জোড়াইবা কম কীসে! একটু আগে ৭ টপেও অনেক বড় বোর্ড নিয়েছে ভাই শাহীন।

মালাকর তাশ তিনটা তুলে দেখে নিয়ে অন্য তাশগুলোর সাথে মিশিয়ে দেয় আর বিড়বিড় করে বলে, ‘ধুর! সম্রাট না থাকলে থ্রি-কার্ড জমে নাকি! এ-কে ৪৭ দাদাও নেই।’ সম্রাট মানে সত্যিকারের সম্রাট-ইলতুৎ মিশ। এই থ্রিকার্ড জগতের অবিসংবাদিত সম্রাট!

টানা ছাব্বিশ ঘন্টার খেলায় সবাই-ই ছিল ক্লান্ত। মালাকরের কথায় সবাইই যেন হুশ ফিরে পায়। সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়-এবার একটি জোকার করা হবে এবং এই জোকার শেষ মানে আজকের মত খেলা শেষ।
খেলা শেষ। রাকিবের ১৭০ টাকা হার। এটাই সর্বোচ্চ। আর সালাউদ্দীনের ১৫০ টাকাই সর্বোচ্চ জেতা। ছাব্বিশ ঘন্টা খেলার এই হল ফলাফল।

এবার খাওয়া-দাওয়ার পালা। মোজামের দোকানে গিয়ে চা-বিস্কুট-রুটি-ডিম। যে যে জিতেছে সে সে মূল্য পরিশোধ করবে। এই-ই নিয়ম।

তারপর ক্যাম্পাস। চাদের আলোয় সামান্য শিশিরভেজা ঘাসের উপর বসে বসে হিসেব করা কোন বোর্ডে রাকিবের বসে যাওয়া উচিত হয়নি, কোন বোর্ডে মালাকর একটা জোকার পেলে রতনের সাহেবের ট্রয়টা মেরে দেয়া যেত। যেবার বিবি জোকার ছিল সেবার বিবি না হয়ে দুই জোকার হলে ১০০ টাকার বোর্ডটা লিটনই পেত। ই-ত্যা-দি।

আমার গ্রাম











কৃষ্ণচূড়া আর সোনালুর গলাগলি...

গোলপাতা, গরু ও রাখাল...